Tuesday, November 21, 2017

বিশেষ নামাজ

বিশেষ নামাজ

বিশেষ নামাজ:
• তাহাজ্জুদের নামাজ :-
এশা'র পর এবং ফজরের আগে এই নামাজ পড়তে হয়।
• ফরজ নামজের পরে সকল নফল নামাজের মধ্যে সবচেয়ে মর্যাদার নামাজ হল তাহাজ্জুদ এর নামাজ। যারা বিনা হিসাবে জান্নাতে যেতে পারবেন তাদের মধ্যে এক শ্রেণী হল যারা যত্নের সাথে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ে। কুরআন শরীফে “আলিফ লাম মিম সিজদা” এ খাঁটি ও নিষ্ঠাবান মুমিনদের একটি গুন বর্ণনা করে বলা হয়েছে- “অর্থ – তাদের পার্শ্বদেশ বিছানা হতে আলাদা থাকে”। অধিকাংশ মুফাচ্ছিরদের মতে এখানে বলা হয়েছে যারা তাহাজ্জুদ নামাজ পরে। ইবনে কাছিরে বলা হয়েছে কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলার পক্ষ হতে এইসব লোকদের দাঁড়ানোর নির্দেশ দেয়া হবে। এবং আল্লাহ তাআলা তাদেরকে বিনা হিসাবে জান্নাতে পৌঁছে দিবেন। এশার নামাজের পর থেকে সুবহে সাদিকের পূর্ব পর্যন্ত যে নামাজ পড়া হয় তাকে তাহাজ্জুদ নামাজ বলা হয়। নফল নামাজের মধ্যে এই প্রকার নফল অর্থাৎ তাহাজ্জুদ নামাজের ফজিলত সবচেয়ে বেশি। এশার নামাজের পর হতে সুবহে সাদিক পর্যন্ত তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার সময় কিন্তু শেষ রাতে তাহাজ্জুদ পড়া উত্তম। তাহাজ্জুদ নামাজ ২রাকাত হতে ১২ রাকাত।কিন্তু রাসুল (সাঃ) ৮ রাকাত পরতেন বিধায় এটাকে উত্তম মনে করা হয়। পারলে ৮ রাকাত অথবা না পারলে ৪ রাকাত অথবা তাও হিম্মত না হলে কমপক্ষে ২ রাকাত পরবে।
• তাহাজ্জুদ নামাজ এর নিয়াতঃ
"আমি কেবলামুখি হইয়া তাহাজ্জুদ এর দুই রাকাত সুন্নাত নামাজ পড়িবার নিয়াত করছি"
• নামাজ এর নিয়মঃ
তাহাজ্জুদ এর নামাজ ২ রাকাত করে পড়তে হয়।প্রত্যেক রাকাতে সুরা ফাতেহার সাথে ৩ বার করে সুরা ইখলাস পড়তে হয়।নামাজের বাকি নিয়ম অন্য সব নামাজের মতোই।
• তাহাজ্জুদ নামাজের গুরুত্তঃ
• তাহাজ্জুদের গুরুত্ত অপরিসীম। ফরজ নামাজের পরে উত্তম নামাজ হলো তাহাজ্জুদের নামাজ। হাদিস শরীফে রাসূল (স.) এরশাদ করেছেন, ‘রমজানের পর উত্তম রোজা হলো মুহাররম মাসের রোজা এবং ফরজ নামাযের পর উত্তম নামাজ হলো রাতের নামাজ’ (তাহাজ্জুদের নামাজ)। তাহাজ্জুদগুজার বান্দাহ্দের অগ্রগতির স্বীকৃতি আল্লাহপাক স্বয়ং নিজেই দিয়েছেন যথা আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পবিত্র কোরআনে এরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি রাত্রিকালে সেজদার মাধ্যমে অথবা দাঁড়িয়ে এবাদত করে, পরকালের আশঙ্কা রাখে এবং তার পালন কর্তার রহমত প্রত্যাশা করে, সে কি তার সমান? যে এরূপ করে না’ (সূরা জুমার, আয়াত নং-৯)।
বেহেশতবাসী পরহেজগার মুমিন বান্দাদের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে তারা রাত্রির শেষাংশে জাগ্রত থেকে নামাজ পড়ে ও আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে। আল্লাহ তা’আলা তাদের বর্ণনা দিয়েছেন যে, ‘তারা (খোদাভীরুরা) রাত্রির সামান্য অংশেই নিদ্রা যেত এবং রাতের শেষ প্রহরে তারা ক্ষমা প্রার্থনা করত।’ (সূরা আজ-জারিয়াত, আয়াত-১৭-১৮)।
মহান প্রভু পবিত্র কোরআনের সূরা ফুরকানে তাঁর প্রিয় বান্দাহ্দের ১৩টি বিশেষ গুণাবলী ও আলামত বর্ণনা করেছেন। সেই বিশেষ গুণসমূহের একটি হচ্ছে- তাহাজ্জুদ নামাজ। আল্লাহ পাক এরশাদ করেন, ‘এবং যারা রাত্রি যাপন করে পালনকর্তার উদ্দেশ্যে সেজদাবনত হয়ে ও দন্ডায়মান হয়ে।’ (সূরা আল- ফুরকান, আয়াত-৬৪)।
কেয়ামতের ভয়াবহ বিপর্যয় ও কঠিন হিসাব-নিকাশের দিবসে কোন ব্যক্তি যদি সহজ হিসাব কামনা করে, তবে তার উচিত হবে নিয়মিত তাহাজ্জুদের নামাজ পড়া। শ্রেষ্ঠতম মুফাসিসরে কোরআন আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস (র.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি হাশরের ময়দানে সহজ হিসাব কামনা করে, তার উচিত হবে আল্লাহ যেন তাকে রাত্রির অন্ধকারে সেজদারত ও দাঁড়ানো অবস্থায় পান। তার মধ্যে পরকালের চিন্তা ও রহমতের প্রত্যাশাও থাকা দরকার। (তাফসিরে কুরতুবি, মা’আরেফুল কোরআন, ক্বিয়ামুল লাইল)।
মহান আল্লাহ তা’আলা তাহাজ্জুদগুজার বান্দাহ্দের জন্য জান্নাতে অসাধারণ বালাখানা সজ্জিত করেছেন। হজরত আবু মালেক আশআরী (রা.) থেকে বর্ণিত এক হাদীসে রাসূল (স.) বলেন, ‘জান্নাতে এমন কক্ষ থাকবে যার ভিতরের অংশ বাহির থেকে এবং বাইরের অংশ ভিতর থেকে দৃষ্টিগোচর হবে।’ সাহাবারা জিজ্ঞেস করলেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ (স.) এসব কক্ষ কাদের জন্য? উত্তরে রাসূল (স.) বললেন, যে ব্যক্তি সালাম করে, ক্ষুধার্তকে আহার করায় এবং রাত্রে যখন সবাই নিদ্রিত থাকে, তখন সে তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ে। (মুসনাদে আহমদ, বায়হাকী তিরমিজি ) (তাফসিরে মাজহারি, মা’আরেফুল কোরআন)।
আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জত রোজ হাশরে সমগ্র সৃষ্টিকুলের উপস্থিতিতে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায়কারী প্রিয় বান্দাহদের মহান সম্মানে ভূষিত করবেন। হজরত আসমা বিনতে ইয়াজিদ হতে বর্ণিত আছে যে, ‘রাসূল (স.) এরশাদ করেছেন, কেয়ামতের দিন যখন আল্লাহ পাক পূর্ববর্তী মানবম-লীকে একত্রিত করবেন, তখন আল্লাহর পক্ষ থেকে এক আহ্বানকারী (যার আওয়াজ সমগ্র সৃষ্টিকুল শুনতে পাবে) দাঁড়িয়ে আহ্বান করবেন- হে হাশরের মাঠে সমবেত মানবম-লী, আজ তোমরা জানতে পারবে যে, আল্লাহপাকের নিকট সর্বাধিক সম্মান ও মর্যাদার অধিকারী কে? অনন্তর সে ফেরেশতা ‘যাদের পার্শ্বদেশ শয্যা থেকে পৃথক থাকে’ এরূপ গুণের অধিকারী লোকগণকে দাঁড়াতে আহ্বান জানাবেন। এই আওয়াজ শুনে এসব লোক (তাহাজ্জুদগুজার) দাঁড়িয়ে পড়বেন, যাদের সংখ্যা হবে খুবই নগণ্য। এদের হিসাব গ্রহণ ব্যতিতই বেহেশতে প্রেরণ করা হবে। অতঃপর অন্যান্য সমগ্র লোক দাঁড়াবে এবং তাদের হিসাব গ্রহণ করা হবে। (তাফসিরে ইবনে কাসির, মাজহারি, মা’আরিফুল কোরআন)।
তাহাজ্জুদ নামাজ; মন্দ কাজের কাফফারা ও আল্লাহর নৈকট্য লাভের মহান সুযোগ। তিরমিযি শরীফে হজরত আবু উমামা বর্ণিত এক হাদিসে রাসূল (স.) এরশাদ করেছেন, নিয়মিত তাহাজ্জুদ পড়। কেননা এটি তোমাদের পূর্ববর্তী সব নেক বান্দাহর অভ্যাস ছিল। এটা তোমাদেরকে আল্লাহ তা’আলার নৈকট্যদানকারী, মন্দ কাজের কাফফারা এবং গুনাহ থেকে নিবৃত্তকারী। (মাজহারি, মাআরেফুল কোরআন)।
প্রত্যেক মুমিন ব্যক্তি কামনা করেন, আল্লাহ যেন তার প্রয়োজন মিটিয়ে দেন, তার এবাদত-বন্দেগি কবুল করেন এবং তার ভুল-ত্রুটি ক্ষমা করে দেন। এসব চাওয়া-পাওয়ার প্রধান অবলম্বন হলো তাহাজ্জুদ নামাজ। সহিহ হাদিসের সবকটি কিতাবেই এই হাদিসটি বর্ণিত আছে যে, হজরত আবু হুরাইরা (রা.) বর্ণিত রাসূল (স.) বলেছেন, ‘আল্লাহ তা’আলা প্রতি রাতের শেষাংশে দুনিয়ার আকাশে বিরাজমান হন এবং ঘোষণা দেন যে, কোনো প্রার্থনাকারী আছ কি? যার প্রার্থনা আমি কবুল করব। প্রয়োজন প্রার্থনার কোনো লোক আছ কি? যার প্রয়োজন আমি পূর্ণ করে দেব। এবং কোনো ক্ষমা প্রার্থনাকারী আছ কি? যাকে আমি ক্ষমা করে দেব।’
তাহাজ্জুদ নামাজের গুরুত্ব ও ফযিলত সম্পর্কে আরো অনেক সুস্পষ্ট আয়াতে কারিমা ও হাদিস শরীফ রয়েছে যা সীমিত পরিসরে আলোচনা করে শেষ করা যাবে না। উক্ত আয়াত ও হাদিস শরীফসমূহ থেকে এটি পরিষ্কার হয় যে, তাহাজ্জুদ নামাজ আল্লাহর সাথে বান্দার কথোপকথনের এক মহান অবলম্বন।তাহাজ্জুদের বদৌলতে মানুষ মহান মর্যাদার অধিকারী হয়। জনৈক বুজুর্গ বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি উন্নতি চায় সে যেন শেষ রাত্রিতে জাগ্রত থেকে তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ে।’ তাহাজ্জুদের ফলে মানুষের অন্তরাত্মা পশুত্বের প্রভাবমুক্ত হয়ে ঈমানি আলোয় উদ্ভাসিত হয়। ফলে হৃদয়ে প্রফুল্লতা আসে এবং এবাদতের স্বাদ অনুভূত হয়। সুতরাং তাহাজ্জুদ নামাজ প্রতিটি মুসলিমের জন্য ইহকালীন উন্নতি ও পরকালিন মুক্তি।
• তারাবীহ্ এর নামাজ : শুধু মাত্র রমজান মাসে এই নামাজ পড়তে হয়। এশা'র নামাজের ২ রাকাত সুন্নত আদায় করার পরে এবং বিতর নামাজ এর আগে ২০ রাকাত তারাবীহ্ এর নামাজ আদায় করতে হয়। আহলেহাদীছদের মতে, তারাবীর ছালাত ছহীহ হাদীছ মোতাবেক ৩ রাকাত বিতর সহ মোট ১১ রাকাত আদায় করা সুন্নাত।[৪]
ছলাতুত তারাবীহ বা তারবীহ নামায: তারাবীহ শব্দটি বহুবচন। একবচনে ‘তারবীহাতুন’। এর অর্থ হচ্ছে বিশ্রাম নেয়া বা আরাম করা। পাঁচ তারবীহাতুন মিলে এক তারাবীহ। অর্থাৎ, চার রাকাআত পর পর বসে দুআ, দুরূদ ও তাসবীহ পাঠের মাধ্যমে বিশ্রাম নিয়ে বিশ রাকাআত নামায আদায় করা হয় বলে এর নামকরণ করা হয়েছে ‘তারাবীহ’।
মাসআলা: তারাবীহ্ নামায বিশ রাকাআত।
পুরুষ-মহিলা প্রত্যেকের জন্যই এ নামায সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ। বিশ রাকাআত থেকে কেউ যদি এক রাকাআতও কম পড়ে তাহলে সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ তরক করার কারণে ওয়াজিব তরকের গুনাহে গুনাহগার হবে।
তারাবীহ নামায জামাআতে পড়া, তা খতম তারাবীহ হোক বা সূরা তারাবীহ হোক উভয়টিই পৃথকভাবে সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ কিফায়া। খতমে তারাবীহ পড়িয়ে বা কুরআন শরীফ খতম করে উজরত বা পারিশ্রমিক গ্রহণ করা জায়িয। মহিলাদের মসজিদে গিয়ে জামাআত-এর সাথে তারাবীহ বা অন্যান্য নামায আদায় করা সম্পূর্ণরূপে হারাম ও কুফরী।
তারাবীহ নামায বিশ রাকাআত পড়ার দলীল
আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামাআতের ফতওয়া মুতাবিক তারাবীহ-এর নামায বিশ রাকাআত পড়াই সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ। অতএব, কেউ যদি বিশ রাকাআত থেকে এক রাকাআতও কম পড়ে, তবে তার সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ তরক করার গুনাহ হবে। অর্থাৎ তারাবীহ-এর নামায বিশ রাকাআতই পড়তে হবে। এর উপরই ইজমা হয়েছে। যারা তারাবীহ-এর নামায ৮ রাকাআত বলে থাকে, তারা বুখারী শরীফ-এ বর্ণিত উম্মুল মু’মিনীন হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার হাদীছ শরীফখানা দলীলস্বরূপ পেশ করে থাকে। যাতে বর্ণিত আছে যে, “আল্লাহ পাক উনার রসূল হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রমাদ্বান শরীফ-এ এবং রমাদ্বান শরীফ ব্যতীত অন্যান্য মাসে (বিতর সহ) ১১ রাকাআত নামায আদায় করতেন।” মূলত এটি হচ্ছে তাহাজ্জুদ নামাযের বর্ণনা, তারাবীহ-এর নামাযের বর্ণনা নয়। কারণ তারাবীহ নামায শুধুমাত্র রমাদ্বান শরীফ-এর জন্যই নির্দিষ্ট। রমাদ্বান শরীফ ব্যতীত অন্যান্য মাসে তারাবীহ নামায নেই। আর তাহাজ্জুদের নামায সারা বছরই পড়তে হয়।
অতএব, হানাফী মাযহাব মতে “তারাবীহ-এর নামায বিশ রাকাআত”- এ ব্যাপারে বহু হাদীছ শরীফ বর্ণিত রয়েছে।
যেমন এ প্রসঙ্গে হাদীছ শরীফ-এ বর্ণিত রয়েছে-
عن ابن عباس رضى الله تعالى عنه ان النبى صلى الله عليه وسلم كان يصلى فى رمضان عشرين ركعة سوى الوتر.

অর্থ: “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিশ রাকাআত তারাবীহ নামায পড়তেন বিতর নামায ব্যতীত।” অর্থাৎ তারাবীহ নামায বিশ রাকাআত এবং বিতর তিন রাকাআত মোট তেইশ রাকাআত। (মুছান্নাফ ইবনে আবী শায়বা)
হাদীছ শরীফ-এ আরো বর্ণিত রয়েছে-
عن على وعمر رضى الله تعالى عنهما وغيرهما من اصحاب النبى صلى الله عليه وسلم عشرين ركعة.

অর্থ: “হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ও হযরত উমর ইবনূল খত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু এবং অন্যান্য ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের থেকে বর্ণিত রয়েছে, তারাবীহ নামায বিশ রাকাআত।” (তিরমিযী শরীফ)
روى البيهقى باسناد صحيح كانوا يقيمون على عهد عمر عشرين ركعة على عهد عثمان وعلى رضى الله تعالى عنهم.

অর্থ: হযরত ইমাম বায়হাক্বী রহমতুল্লাহি আলাইহি ছহীহ সনদে বর্ণনা করেন যে, “খুলাফায়ে রাশিদীন হযরত উমর ফারূক্ব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, হযরত উছমান যুন নূরাইন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, হযরত আলী কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহু রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনারা সকলেই বিশ রাকাআত (তারাবীহ) নামায আদায় করেছেন।”
عن يزيد بن رومان رحمة الله عليه انه قال كان الناس يقومون فى زمان عمربن الخطاب رضى الله تعالى عنه فى رمضان بثلث وعشرين ركعة.

অর্থ: “হযরত ইয়াযীদ ইবনে রুমান রহমতুল্লাহি আলাইহি বর্ণনা করেন, হযরত উমর ফারূক্ব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার খিলাফতকালে সকল ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা সকলেই তারাবীহ নামায ও বিতর নামাযসহ মোট তেইশ রাকাআত নামায আদায় করতেন।” (মুওয়াত্তা ইমাম মালিক)
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে, যামানার তাজদীদী মুখপত্র “মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ”-এর ২৫, ২৬, ২৭, ২৮, ২৯, ৩০, ১৭৫তম সংখ্যা পাঠ করুন। সেখানে ৩০৪ খানা অকাট্য ও নির্ভরযোগ্য দলীলের ভিত্তিতে ছাবিত করা হয়েছে যে, তারাবীহ নামায বিশ রাকাআত পড়াই সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ এবং এটাই গ্রহণযোগ্য ও ছহীহ মত।
ছলাতুত তারাবীহ-এর নিয়ত
نويت ان اصلى لله تعالى ركعتى صلوة التراويح سنة رسول الله تعالى متوجها الى جهة الكعبة الشريفة الله اكبر.
উচ্চারণ: নাওয়াইতু আন উছল্লিয়া লিল্লাহি তা’আলা রকাআতাই ছলাতিত তারাবীহ সুন্নাতু রসূলিল্লাহি তা’আলা মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।
অর্থ: আমি ক্বিবলামুখী হয়ে দু’রাকাআত তারাবীহ সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ নামাযের নিয়ত করছি। আল্লাহু আকবার।
তারাবীহ নামায-এ দু’রাকাআত পর পর দুআ
তারাবীহ নামায-এর দু’রাকাআত পর নিম্নোক্ত দুআ পড়তে হয়-
هذا من فصل ربى يا كريم المعروف يا قديم الاحسان احسن الينا باحسانك القديم ثبت قلوبنا على دينك برحمتك يا ارحم الرحمين.
উচ্চারণ: হা-যা মিং ফাদ্বলি রব্বী ইয়া কারীমাল মা’রূফ, ইয়া ক্বদীমাল ইহসান, আহসিন ইলাইনা বি ইহসানিকাল ক্বদীম। ছাব্বিত ক্বুলূবানা আলা দীনিকা বিরহমাতিকা ইয়া আরহামার রহিমীন।
তারাবীহ নামায-এ চার রাকাআত পর পর দুআ
তারাবীহ নামায-এ চার রাকাআত পর পর নিম্নোক্ত দুআ পড়তে হয়-
سبحان ذى الملك والملكوت سبحان ذى العزة والعظمة والهيبة والقدرة والكبرياء والجبروت . سبحان الملك الحى الذى لاينام ولا يموت ابدا ابدا سبوح قدوس ربنا ورب الملئكة والروح.

উচ্চারণ: সুব্হানাযিল মুলকি ওয়াল মালাকূতি সুবহানাযিল ইযযাতি ওয়াল আযমাতি ওয়াল হাইবাতি ওয়াল ক্বুদরতি ওয়াল কিবরিয়ায়ি ওয়াল জাবারূত। সুব্হানাল মালিকিল হায়্যিল্লাযী লা-ইয়ানামু ওয়ালা ইয়ামূতু আবাদান আবাদা। সুব্বূহুন ক্বুদ্দূছুন রব্বুনা ওয়া রব্বুল মালা-য়িকাতি ওয়ার রূহ্।
তারাবীহ নামায-এ চার রাকাআত পর পর মুনাজাত
اللهم صل على سيدنا ونبينا وحبيبنا وشفيعنا ومولنا صلى الله عليه وسلم. رب ارحم هما كما ربيانى صغيرا. ربنا افرغ علينا صبرا وتوفنا مسلمين. ربنا اتنا فى الدنيا حسنة وفى الاخرة حسنة وقنا عذاب النار. اللهم انا نسئلك الجنة ونعوذبك من النار يا خالق الجنة والنار. برحمتك ياعزيز ياغفار ياكريم ياستار يارحيم يا جبار يا خالق يا بار. اللهم اجرنا من النار يا مجير يا مجير يا مجير برحمتك يا ارحم الراحمين. سبحان ربك رب العزة عما يصفون. وسلام على المرسلين. والحمد لله رب العلمين.
মুনাজাত: আল্লাহুম্মা ছল্লি আ’লা সাইয়্যিদিনা ওয়া নাবিয়্যিনা ওয়া হাবীবিনা ওয়া শাফী’য়িনা ওয়া মাওলানা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। রর্ব্বিহাম হুমা কামা রব্বাইয়্যানী ছগীরা, রব্বানা আফ্রিগ্ আলাইনা ছব্রাওঁ ওয়া তাওয়াফ্ফানা মুসলিমীন। আল্লাহুম্মা ইন্না নাসআলুকাল জান্নাতা ওয়া না’ঊযুবিকা মিনান নার। ইয়া খালিক্বাল জান্নাতি ওয়ান নার। বিরহমাতিকা ইয়া আযীযু ইয়া গফ্ফারু ইয়া কারীমু ইয়া সাত্তারু ইয়া রহীমু ইয়া জাব্বারু ইয়া খালিক্বু ইয়া বা-র। আল্লাহুম্মা আজিরনা মিনান নার। ইয়া মুজীরু ইয়া মুজীরু ইয়া মুজীর। বিরহমাতিকা ইয়া আরহামার রহিমীন। সুবহানা রব্বিকা রব্বিল ইয্যাতি আম্মা ইয়াছিফূন-ওয়া সালামুন আলাল মুরসালীন। ওয়াল-হামদুলিল্লাহি রব্বিল আলামীন।

• জানাযার নামাজ : কোন মুসলমান মারা গেলে, মৃত দেহ কবর দেওয়ার আগে এই নামাজ পড়তে হয়। জানাযার নামাজ ফরযে কেফায়া।

• নিয়মিত জানাযার নামাজ না পড়ার কারণে অনেকেই নামাজের নিয়ম ঠিক মত জানেন না। তাই তাদের জন্য এটা শেয়ার করা হল।
• মৃত ব্যক্তিকে গোসল করাইয়া, কাফন পরাইয়া তাহার মাগফিরাত ও পরকালে মুক্তির জন্য কতক লোক একত্র হইয়া যে নামায পড়িতে হয়, তাহাকে জানাযার নামায বলে। এই নামায মুসলমানদের উপর ফরযে কেফায়া অথাৎ জানাযার সংবাদ শ্রবণকারী সকল লোকের পক্ষ হইতেই ফরয আদায় হইয়া যায়, আর কেহই আদায় না করিলে প্রত্যেককেই গাণাহগার হইতে হইবে।
• লাশকে গোসল করাইয়া কাফন পরাইয়া একটি প্রশস্ত পবিত্র স্থানে খাটের উপরে উত্তর শিয়রী করিয়া শয়ন করাইবে; তারপর মৃতের যাবতীয় ঋণ ও দেনা ইত্যাদি শোধ বা মাফ করাইয়া তাহার সন্তান বা অন্য কোন ওলী ব্যক্তি নামাযের ইমামতী করিতে মৃতকে সম্মুখে রাখিয়া তাহার বক্ষ বরাবর দন্ডায়মান হইবেন। লাশের ওলী নিজে ইমামতী না করিলে তাহার অনুমতিক্রমে অন্য কোন পরহেজগার আলেম ব্যক্তি ইমাম নিযুক্ত হইবেন। ইমামের পিছনে মোক্তাদিরা তিন, পাঁচ বা সাত এইরূপ বে-জোড় কাতারে দাঁড়াইবে। এই নামায দাঁড়াইয়া আদায় করিতে হয়, ইহাতে কোন রুকু সিজদা বা বৈঠক ইত্যাদি নাই। এই নামায বসিয়া পড়িলে শুদ্ধ হইবে না।
• ইমাম ও মোক্তাগিণ একই সঙ্গে নিয়া কাঁধ পর্যন্ত হাত উঠাইয়া তাকবীরে তাহরীমা বলিয়া হাত বাঁধিবে। ইহার পর ক্রমান্বয়ে আর ও অতিরিক্ত তিনটি তাকবীর বলিতে হইবে, তবে তাহাতে হাত উঠাইতে হইবে না, বরং তাহরিমা বাঁধা অবস্থায় থাকিবে। তাকবীর ইমাম এক শব্দ করিয়া উচ্চারণ করিবেন আর মোক্তাদিরা চুপে চুপে বলিবে।
• অতিরিক্ত তাকবীর তিনটি বলিবার নিয়ম এইরূপ প্রথম অর্থাৎ তাকবীরে তাহরীমার পরে প্রত্যেকে (চুপে চুপে) ছানা পাঠ করিবে। তারপর ২য় তাকবীর বলিয়া (চুপে চুপে) দুরুদ পাঠ করিবে (তাশহাহুদের পরে যে দরূদ পঠিত হয়)। তারপর তৃতীয় তাকবীর বলিয়া সালাম ফিরাইয়া নামাজ শেষ করিবে।
• জানাযা নামাযের নিয়ত
نَوَيْتُ اَنْ اُوَدِّىَ لِلَّهِ تَعَالَى اَرْبَعَ تَكْبِيْرَاتِ صَلَوةِ الْجَنَازَةِ فَرْضُ الْكِفَايَةِ اَلثَّنَاءُ لِلَّهِ تَعَالَى وَالصَّلَوةُ عَلَى النَّبِىِّ وَالدُّعَاءُ لِهَذَا الْمَيِّتِ اِقْتِدَيْتُ بِهَذَا الاِْمَامِ مُتَوَجِّهًا اِلَى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِ يْفَةِ اَللَّهُ اَكْبَرُ-
• উচ্চারণঃ নাওয়াইতু আন উয়াদ্দিয়া লিললাহে তায়ালা আরবাআ তাকরীরাতে ছালাতিল জানাযাতে ফারযুল কেফায়াতে আচ্ছানাউ লিললাহি তায়ালা ওয়াচ্ছালাতু আলান্নাবীয়্যে ওয়াদ্দোয়াউ লেহাযাল মাইয়্যেতি এক্কতেদায়িতু বিহাযাল ইমাম মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারিফাতি আললাহু আকবার।
• অনুবাদঃ আমি আললাহর উদ্দেশ্যে জানাযা নামাজের চারি তাকবীর ফরযে কেফায়া কেবলামুখী হয়ে ইমামের পিছনে আদায় করার মনস্থ করলাম। ইহা আললাহু তায়ালার প্রশংসা রাসূলের প্রতি দরূদ এবং মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া (আর্শীবাদ) আললাহ মহান।
• নিয়তের মধ্যে অন্যান্য জামাতের নামাযের নিয়তের ন্যায় ইমাম তাহার অতিরিক্ত খাছ কালাম (আনা ইমামুললিমান হাজারা ওয়া মাইয়্যাহজুরু) এবং মোক্তাদিগণ তাহাদের অতিরিক্ত খাছ কালামটি পাঠ করিবেন।
• (একতেদাইতু বেহাযাল ইমাম) আর নিয়তের ‘লেহাযাল মাইয়্যেতি’ শব্দটি কেবল পুরুষ লাশের বেলায় বলিতে হইবে, কিন্তু স্ত্রী লাশ হইলে ঐ শব্দটির স্থলে ‘লেহাযিহিল মাইয়্যেতি’ বলিতে হইবে।
• নিয়তের পরে ছানা পড়িতে হয়
• سُبْحَانَكَ اَللَّهُمَّ وَبِحَمْدِكَ وَتَبَارَكَ اسْمُكَ وَتَعَالَى جَدُّكَ وَجَلَّ ثَنَاءُكَ وَلاَ اِلَهَ غَيْرُكَ-
• উচ্চারণঃ সুবহা-নাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা, ওয়া তাবারা কাসমুকা ওয়া তায়ালা জাদ্দুকা, ওয়া জালল্লা ছানাউকা ওয়া লা-ইলাহা গাইরুকা।
• অনুবাদঃ হে আললাহ আমরা তোমার পবিত্রতার গুণগান করিতেছি। তোমার নাম মঙ্গলময় এবং তোমার স্তুতি অতি শ্রেষ্ঠ, তুমি ব্যতীত আর কেহই উপাস্য নাই।
• ছানার পরে তাকবীর বলিয়া তাশাহুদের পরের দরূদ পড়িতে হয়।
• اَللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى اَلِ مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى اِبْرَاهِيْمَ وَعَلَى اَلِ اِبْرَاهِيْمَ اِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ- اَللَّهُمَّ بَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى اَلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلَى اِبْرَاهِيْمَ وَعَلَى اَلِ اِبْرَاهِيْمَ اِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ
• উচ্চারনঃ আললাহুম্মা সাললিআলা মুহাম্মাদিঁ ওয়া আলা আলি মুম্মাদিন কামা সাললাইতা আলা ইব্রাহীমা ওয়া আলা আলি ইব্রাহীমা ইন্নাকা হামিদুম্মাজীদ। আললাহুম্মা বারিক আলা মুহাম্মাদিঁ ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদিন কামা বারাকতা আলা ইব্রাহীমা ওয়া আলা আলি ইব্রাহীমা ইন্নাকা হামীদুম্মাজীদ।
• অনুবাদঃ যে আললাহ! মুহাম্মদ (সাললাললাহু আলাইহি ওয়া সাললাম) এবং তাঁহার বংশধরগণের উপর ঐরূপ আশীর্বাদ অবতীর্ণ কর যেইরূপ আর্শীবাদ হযরত ইব্রাহিম (আঃ) এবং তাঁহার বংশধরগণের উপর অবতীর্ণ করিয়াছ। নিশ্চয়ই তুমি প্রশংসা ভাজন এবং মহামহিম। হে আললাহ! মুহাম্মদ (সাললাললাহু আলাইহি ওয়া সাললাম) এবং তাঁহার বংশধরগণের উপর সেইরূপ অনুগ্রহ কর যেরূপ অনুগ্রহ ইব্রাহীম (আঃ) এবং তাঁহার বংশধরগণের উপর করিয়াছ। নিশ্চয়ই তুমি প্রশংসা ভাজন এবং মহামহিম।
• তাবীয দিয়ে পয়সা খাওয়া কি হালাল ?
• জানাযার দোয়া
• اَلَّهُمَّ اغْفِرْلِحَيِّنَا وَمَيِّتِنَا وَشَاهِدِنَا وَغَائِبِنَا وَصَغِيْرِنَا وَكَبِيْرِنَا وَذَكَرِنَا وَاُنْثَا نَا اَللَّهُمَّ مَنْ اَحْيَيْتَه‘ مِنَّا فَاَحْيِهِ عَلَى الاِْسْلاَمِ وَمَنْ تَوَفَّيْتَهُ مِنَّا فَتَوَفَّهُ عَلَ الاِْيْمَانِ بِرَحْمَتِكَ يَا اَرْحَمَ الرَّاحِمِيْنَ-
• উচ্চারণঃ আললাহুম্মাগফিরলি হাইয়্যেনা ওয়া মাইয়্যিতিনা ওয়া শাহীদিনা ওয়া গায়িবিনা ও ছাগীরিনা ও কাবীরিনা ও যাকারিনা ও উনছানা। আললাহুম্মা মান আহইয়াইতাহু মিন্না ফাআহয়িহি আলাল ইসলামী ওয়া মান তাওয়াফ ফাইতাহু মিন্না ফাতাওয়াফ ফাহু আলাল ঈমান বেরাহমাতিকা ইয়া আর হামার রাহীমিন।
• অনুবাদঃ হে আললাহ্ আমাদের জীবিত ও মৃত উপস্থিত ও অুপস্থিত বালকও বৃদ্ধ পুরুষ ও স্ত্রীলোকদিগকে ক্ষমা কর। হে আললাহ! আমাদের মধ্যে যাহাদিগকে তুমি জীবিত রাখ তাহাদিগকে মৃত্যু মুখে পতিত কর।
• তাহাদিগকে ঈমানের সাথে মৃত্যু বরণ করাইও। লাশ যদি নাবালক ছেলে হয় তবে নিচের দোয়া পড়তে হবে।
• اَللَّهُمَّ اجْعَلْهُ لَنَا فَرْطًاوَّ اَجْعَلْهُ لَنَا اَجْرًاوَّ ذُخْرًا وَّاجْعَلْهُ لَنَا شَافِعًا وَّمُشَفَّعًا-
• উচ্চারণঃ আললাহুম্মাজ আলহুলানা ফারতাঁও ওয়াজ আলহুলানা আজরাও ওয়া যুখরাঁও ওয়াজ আলহুলানা শাফিয়াও ওয়া মুশাফ্ফায়ান।
• অনুবাদঃ হে আললাহ! উহাকে আমাদের জন্য অগ্রগামী কর ও উহাকে আমাদের পুরস্কার ও সাহায্যের উপলক্ষ কর এবং উহাকে আমাদের সুপারিশকারী ও গ্রহনীয় সুপারিশকারী বানাও।
• লাশ যদি নাবালেগা মেয়ে হয় তবে নিচের দোয়া পড়তে হবে।
• اَللَّهُمَّ اجْعَلْهَ لَنَا فَرْطًا وَاجْعَلْهَ لَنَا اَجْرً اوَّ ذُخْرًا وَّاجْعَلْهَا لَنَا شَافِعَةً وَّمُشَفَّعَةً-
• উচ্চারণঃ আললাহুম্মাজ আলহা লানা ফারতাঁও ওয়াজ আলহা লানা আজরাঁও ওয়া যুখরাঁও ওয়াজ আলহা লানা শাফিয়াও ওয়া মুশাফ্ফায়াহ।
• অনুবাদঃ হে আললাহ! ইহাকে আমাদের জন্য অগ্রগামী কর ও ইহাকে আমাদের পুরস্কার ও সাহায্যের উপলক্ষ কর। এবং ইহাকে আমাদের সুপারিশকারী ও গ্রহনীয় সুপারিশকারী বানাও। দুইহাত দুইপাশে ঝুলাইয়া ইমাম সাহেব ডানে এবং বামে ছালাম ফিরাইবে।
• জানাযার নামাজ ও তার ফযীলত
• যখন কোন মুসলমান মারা যায় তখন তার আত্মার শান্তির জন্য বিশেষভাবে কিছু দুআ করা হয়। ঐ বিশেষ প্রক্রিয়ায় দুআ করার নাম জানাযার নামাজ। এই নামাযের ফযীলত সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি কোন মুসলমানের জানাযায় শরীক হয়ে নামাজ পড়ে এবং তাকে কবরও দেয় সে দু কীরাত নেকী পায়। প্রত্যেক কীরাত উহুদ পাহাড় সমান নেকী। আর যে ব্যক্তি শুধু জানাযায় নামাজ পড়ে এবং মাটি দেয় না সে এক কীরাত নেকী পাবে (বুখারী ও মুসলিম, মিশকাত, ১৪৪ পৃষ্ঠা)।
• জানাযার নামাজের জন্য অযু শর্ত
বিখ্যাত তাবেয়ী নাফেঅ বলেন, আবদুল্লা ইবনু ওমর বলতেন, কেউ যেন বিনা অযুতে জানাযার নামায না পড়ে (মুঅত্তা ইমাম মালিক, ৮০ পৃষ্ঠা)। তবে হ্যাঁ, অযু করতে গিয়ে জানাযা যদি ছেড়ে যাবার আশংকা থাকে তাহলে ইবনু আব্বাস (রা.) বলেন, তুমি তায়াম্মুম কর এবং নামাজ পড় (মুসান্নাফ ইবনু আবী শায়বা, ৩য় খণ্ড, ৩০৫ পৃষ্ঠা)।
লাশ ও ইমামের অবস্থান কিরূপ হবে?
সামুরাহ ইবনু জুনদুব (রা.) বলেন, একদা আমি রাসুলুল্লাহর পেছনে একটি মেয়ের জানাযা পড়ি। তখন রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লাশের মাঝ বরাবর দাঁড়ান (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত, ১৪৫ পৃষ্ঠা)।
মুক্তাদীদের লাইন কটা হবে?
মালিক ইবনু হোরায়রা (রা.) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি যে, যে মুসলমানের মরার পর তার জানাযায় মুসলমানদের তিন লাইন লোক নামাজ পড়ে তার জন্য (আল্লাহতা’য়ালা ক্ষমা) অপরিহার্য করে দেন। তাই জানাযা ইমাম মোক্তাদীর সংখ্যা যখন কম মনে করতো তখন মালেক (রা.) এই হাদীসটির ভিত্তিতে তিনটি লাইন করে নিতেন (আবু দাউদ, তিরমিযী, ইবনু মাজা, মিশকাত, ১৪৭ পৃষ্ঠা)।
মুসল্লী সংখ্যা কত হওয়া উচিত?
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, কোন মুসলমানের জানাযায় এমন চল্লিশজন লোক যারা আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করেননি যদি শরীক হয়ে ঐ লাশের জন্য দুআ করে তাহলে আল্লাহতা’য়ালা তাদের সুপারিশ নিশ্চয়ই কবুল করবেন (মুসলিম, মিশকাত, ১৪৫)
জানাযার নামাজ পড়ার নিয়ম
আবু ওমামাহ ইবনু সহাল ইবনু হোনায়ফ (রা.) বলেন, জানাযার নামাজে সুন্নত হল তকবীর দেয়া। তারপর সূরায়ে ফাতেহা পড়া। কিছু আয়াত পড়া তারপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপরে দরূদ পড়া। তারপর মাইয়েতের জন্য আন্তরিক দোয়া পড়া। (ফতহুলবারী ৩য় খণ্ড ২০৩ পৃ:)
আত্মহত্যাকারী, বেনামাযী ও ফাসেকের জানাযা
জাবের বলেন, একদা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে একজন আত্মহত্যাকারীর লাশ আনা হলে তিনি তার জানাযা পড়েননি (মুসলিম, বুলুগুল মারাম, ৩৯ পৃষ্ঠা)। এইরূপ জোহায়না গোত্রের এক ব্যক্তি খায়বারের দিনে গনীমতের (জেহাদেলব্ধ) মাল চুরি করায় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার জানাযা না পড়ে বলেন, তোমরা তোমাদের সাথীর জানাযা পড়ে নাও (বুখারী, মুসলিম, আবু দাউদ, নাসায়ী)।
উক্ত হাদীসের ভিত্তিতে ওলামায়ে কিরাম বলেন, আত্মহত্যাকারী এবং চোর ও ডাকাতের জানাযা আলেম ও পরহেযগার লোক না পড়ে সাধারণ লোক পড়বে। যাতে অন্যান্য লোকেরা সাবধান হয়ে যায় এবং শিক্ষা পায়।
গায়েবী জানাযা
আবিসিনিয়ার বাদশাহ আসহিমাহ নাজ্জাশী যেদিন মারা যান সেদিন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবীদেরকে ঐ মৃত্যু সংবাদ দিয়ে তাদেরকে সঙ্গে নিয়ে মাঠে গিয়ে গায়েবী জানাযা পড়েন (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত, ১৪৪ পৃষ্ঠা)।
ইমাম ইবনু হাযম বলেন, এই হাদীস প্রমাণ করে যে, জামায়াত সহকারে গায়েবী জানাযা পড়া সাহাবায়ে কিরামের ইজমা বা সর্ববাদীসম্মত অভিমত। এর খেলাফ করা বৈধ নয় (মুহাল্লা, ৫ম খণ্ড, ১৬৯ পৃষ্ঠা)।
আল্লামা আব্দুল্লাহ ইবনু ইউসুফ যাইলায়ী হানাফী (রহ.) বাইহাকী এবং ওয়াকিদীর কিতাবুল মাগা-যীর বরাত দিয়ে বর্ণনা করেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মূতা যুদ্ধের দুই শহীদ রাসুলুল্লাহ পালক পুত্র যায়দ ইবনু হা-রিসাহ এবং আলীর বড় ভাই জাফর ইবনু আবী তা-লিবের গায়েবী জানাযা পড়েছিলেন

• ঈদের নামাজ: প্রতি ঈদে দুই রাকাত করে নামাজ পড়া ওয়াজিব।
• "ঈদ এর নামাজ পড়ার নিয়ম"
• ঈদের নামায বছরে পড়তে হয় মাত্র দুইবার, ফলে অনেকেই এর নিয়মকানুন একটু গুলিয়ে ফেলেন। বিষয়টা খুবই সহজ।
• নিয়তঃ
শুরুতে নিয়ত করুন যে আমি আল্লাহর ওয়াস্তে ৬ তাকবিরের সাথে ঈদ উল আযহার এর নাময পড়ছি। নিয়ত আরবিতে করতে হবে এমন কোন নিয়ম নাই। যে যেই ভাষার লোক সেই ভাষাতে নিয়ত করলেই হবে। এমন কি নিয়ত মুখ দিয়ে উচ্চারণ করতে হবে এমন কোন ধরাবাঁধা নিয়ম নাই। (সব নামায এর ক্ষেত্রে)
• উল্লেখ্য ঈদ এর নামাজ ২ রাকাত পড়তে হয় এবং প্রথম রাকাতে অতিরিক্ত ৩ তাকবির (ছানা পড়ার পর) আল্লাহুয়াকবার বলে হাত বেঁধে নামাযে দাঁড়ালেন এখন আপনাকে শুধু ছানা (সুবহানাকা) পড়তে হবে। তখন থেকে আপনাকে আর কিছু পড়তে হবেনা। ইমাম সাহেব ৩ টি তাকবীর বলবেন আপনি ও ইমাম এর সাথে তাকবীর বলবেন (হাত তুলে তাকবীর বলবেন কিন্তু হাত বাধবেন না) ইমাম সুরা পড়বেন, রুকু করবেন সিজদা করবেন আপনি শুধু রুকু সিজদার তাসবিহ পড়বেন
• দ্বিতীয় রাকাতে অতিরিক্ত ৩ তাকবির (সূরা ফাতিহা + অন্য সূরা পড়ার পর)। এখানেও প্রতি তাকবীরের পর হাত ছেড়ে দিবেন অর্থাৎ হাত বাঁধতে হবেনা। এবার ও ইমাম কে অনুসরণ করুন
এইবার ৩য় তাকবীর শেষ হলে চতুর্থবার ‘আল্লাহু আকবার’ বলে হাত না বেঁধে রুকুতে চলে যান রুকুর তাসবিহ পড়ুন সিজদাতে গেলে সিজদার তাসবিহ পড়ুন । সিজদা থেকে উঠার পর আত্তাহিয়াতু/ সাল্লি আলা /বারিক আলা/ দুয়া মাসুরা(আল্লাহুম্মা ইন্নি জালামতু নাফসি পড়ুন এবং অপেক্ষা করুন ইমাম সাহেব সালাম ফিরালে আপনিও সালাম ফিরান। জুম্য়ার খুতবার ন্যায় দু'ঈদের খুতবা শোনাও ওয়াজিব। চুপ করে খুতবা শুনতে হয়।

No comments:

Post a Comment

বাংলা MCQ

বাংলা MCQ সবগুলো প্রশ্নের উত্তর একেবারে নিচে দেয়া হয়েছে।  ১. বিশ্বের সর্বোচ্চ ভবন কোনটি? ক) পিনাক্লিয়েট ডাক্সন খ)  বুর্জ খলিফা  গ) সি...